দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা ২০১৮ বাণিজ্যের উৎসব

admin 02/26/2018 No Comments

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা ২০১৮ বাণিজ্যের উৎসব

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা ২০১৮ এক অন্যতম উল্লেখযোগ্য আয়োজন ছিল যা শুধু বাণিজ্যের বিকাশেই নয়, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং মানুষের সামাজিক সংযোগের একটি মহোৎসব হিসেবে উদযাপিত হয়েছিল। উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত এই মেলা স্থানীয় জনগণের জন্য যেমন আনন্দ এবং বিনোদনের কেন্দ্র ছিল, তেমনই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ তৈরি করেছিল।


মেলার সময়কাল এবং স্থান

২০১৮ সালের দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হয় দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গোর-এ-শহীদ ময়দানে। জানুয়ারি মাসের শুরুতে শুরু হওয়া এই মেলা প্রায় এক মাস ধরে চলে, যা স্থানীয় এবং দূরদূরান্ত থেকে আসা হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল।


অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলায় স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা পণ্যের স্টল ছিল। মোট ২০০টিরও বেশি স্টল এই মেলায় অংশ নেয়।

  1. স্থানীয় পণ্যের স্টল: দিনাজপুরের বিখ্যাত চিড়া-মুড়ি, কাঠের আসবাবপত্র, মাটির হাঁড়ি এবং হস্তশিল্পের স্টল ছিল অন্যতম আকর্ষণ।
  2. জাতীয় পণ্য: দেশের বড় ব্র্যান্ড যেমন বসুন্ধরা, আড়ং, প্রাণ, এবং আড়ং-এর মতো প্রতিষ্ঠানও তাদের পণ্য প্রদর্শন করে।
  3. আন্তর্জাতিক পণ্য: ভারত, নেপাল এবং চীনের পণ্যও এই মেলায় স্থান পায়, যা ক্রেতাদের কাছে বিশেষ আগ্রহ তৈরি করে।

কেনাকাটার আনন্দ

মেলায় ক্রেতারা বিভিন্ন রকমের পণ্য কিনতে পেরেছেন সাশ্রয়ী দামে। খাদ্যদ্রব্য, পোশাক, গৃহস্থালী সামগ্রী, ইলেকট্রনিকস, খেলনা এবং গহনার মতো নানা ধরনের পণ্য এখানে পাওয়া যায়। বিশেষত শীতকালীন পোশাক এবং ঐতিহ্যবাহী সিল্ক শাড়ি ক্রেতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল।


সাংস্কৃতিক কার্যক্রম

মেলা শুধুমাত্র বাণিজ্যের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রতি সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয়েছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। দিনাজপুরের স্থানীয় শিল্পীরা লোকগীতি, নাটক এবং নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মন জয় করেন। তাছাড়া, ঢাকার জনপ্রিয় ব্যান্ড এবং সেলিব্রিটিরাও বিভিন্ন সময় পারফর্ম করে, যা দর্শকদের আনন্দকে বাড়িয়ে তোলে।


শিশু এবং পরিবারের জন্য বিনোদন

মেলায় শিশুদের জন্য ছিল নানা রকম আকর্ষণ। নাগরদোলা, ট্রেন রাইড, এবং পুতুল নাচের মতো আয়োজন শিশুদের আনন্দ দিয়েছে। এছাড়াও পুরো পরিবার মেলার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পেরেছে ফুড কর্নারে বিভিন্ন রকমের খাবারের স্বাদ গ্রহণের মাধ্যমে।


ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা শুধু বিনোদনের জন্যই নয়, ব্যবসায়িক সংযোগ বাড়ানোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নতুন গ্রাহক খুঁজে পায় এবং স্থানীয় বাজার সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। মেলায় বিক্রেতারা যেমন তাদের পণ্যের প্রচার করতে পেরেছেন, তেমনই ক্রেতারাও নতুন এবং উন্নতমানের পণ্য সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছেন।


পরিবেশ এবং নিরাপত্তা

মেলার পরিবেশ ছিল অত্যন্ত সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল। নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ বাহিনী সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে। মেলার আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দিনাজপুর পৌরসভা বিশেষ ব্যবস্থা নেয়।


মেলার বিশেষ দিক

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা ২০১৮ কেবলমাত্র কেনাকাটা বা বিনোদনের স্থান ছিল না, এটি মানুষের সাথে মানুষের বন্ধনের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ ছিল। মেলার মাধ্যমে দিনাজপুরবাসী নতুন ব্যবসায়িক ধারণা পায় এবং তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে পারে।


উপসংহার

দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা ২০১৮ একটি সফল আয়োজন ছিল যা ব্যবসা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সংযোগের এক অসাধারণ উদাহরণ তৈরি করেছিল। মেলার মাধ্যমে দিনাজপুর শহর শুধু অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়নি, বরং মানুষে মানুষে মিলনের এক চমৎকার উদাহরণও স্থাপন করেছে। আগামী বছরগুলোতেও এমন মেলার আয়োজন দিনাজপুরবাসীর আশা এবং আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করবে।

আরো দিনাজপুর বাণিজ্য মেলা সম্পর্কে জানুন  >>>

দিনাজপুর রামসাগর একটি ঐতিহাসিক বিস্ময়

দিনাজপুরের ধর্মপুর শালবন

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট দিনাজপুর