Ad Details
-
Ad ID: 3889
-
Added: 10/08/2024
-
Condition:
-
Views: 109
Description
কান্তজিউ মন্দির দিনাজপুর
কান্তজিউ মন্দির বা কান্তজীর মন্দির বা কান্তনগর মন্দির বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত ।
একটি মধ্যযুগীয় হিন্দু মন্দির।
মহারাজা প্রাণনাথ রায় মন্দিরটি শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর স্ত্রী রুক্মিণীকে উৎসর্গ করে নির্মিত করেন।
এটির নির্মাণ ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় এবং ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পুত্র রাজা রামনাথ রায়ের রাজত্বকালে শেষ হয়।
মন্দিরটির নবরত্ন বা ‘নয় শিখর’ ছিল, কিন্তু ১৮৯৭ সালে সংঘটিত একটি ভূমিকম্পে সবগুলোই ধ্বংস হয়ে যায় ।
এ মন্দিরে বাংলাদেশের সর্বোৎকৃষ্ট টেরাকোটা শিল্পের নিদর্শন রয়েছে ।
পৌরাণিক কাহিনীসমূহ পোড়ামাটির অলঙ্করণে দেয়ালের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সুদূর পারস্য থেকে নির্মান শিল্পীদের আনা হয়েছিল এই মন্দিরের নির্মাণ এবং সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য।
মন্দিরের দক্ষিণ দিকে নয়াবাদ নামক গ্রামে রাজা প্রাণনাথ নির্মাণ শিল্পী এবং শ্রমিকদের বসবাসের জন্য জমি দান করেন।
এই শ্রমিকদের বেশিরভাগই ছিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী।
তাই ধর্মীয় প্রার্থনা পালনের জন্য তারা নয়াবাদ মসজিদ নির্মাণ করেন যা একই এলাকার আরেকটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে।
প্রতি বছর শীতের শুরুতে মন্দির প্রাঙ্গণে এক মাস ব্যাপী রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায় মহারাজা রামনাথ রায়ের সময়কাল থেকেই এই রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
মেলা চলাকালীন সময় অনেক তীর্থ যাত্রী ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মন্দিরে তীর্থ যাত্রা করেন।
অবস্থান
মন্দিরটি দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং কাহারোল উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সুন্দরপুর ইউনিয়নে, দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিমে ঢেঁপা নদীর তীরবর্তী গ্রাম কান্তনগরে অবস্থিত।
ইতিহাস
মন্দিরের উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা জমিদার প্রাণনাথ রায় তার শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পরে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
শুরুতে মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ছিলো ৭০ ফুট।
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটি ভূমিকম্পের কবলে পড়লে এর চূড়াগুলো ভেঙে যায়।
বিশ শতকের শুরুর দিকে মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।
স্থাপত্য
মন্দিরের বাইরের দেয়াল জুড়ে পোড়ামাটির ফলকে রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী চিত্রায়ণ করা আছে। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০-এর মতো টেরাকোটা টালি রয়েছে।
উপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি।
মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়।
মন্দির প্রাঙ্গণ আয়তাকার হলেও, পাথরের ভিত্তির উপরে দাঁড়ানো ৫০ ফুট উচ্চতার মন্দিরটি বর্গাকার।
নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে।
দুটো ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে, স্তম্ভ দুটো খুবই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ অলংকরণযুক্ত।
মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে।
মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে, তবে তৃতীয় তলায় রয়েছে মাত্র ৩টি করে।
দিনাজপুরের আরেকটি সুন্দর ও দর্শনিয় জায়গাঃ>>> রাম সাগর সম্পর্কে জানুন এখানে
দিনাজপুর এর যা যা তথ্য খুজছেন তা পাবেন এখানেঃ>>> দিনাজপুর স্টোর ডট কম