দিনাজপুর জেলা

1 of
Previous Next

Ad Details

  • Ad ID: 1994

  • Added: 09/11/2023

  • Condition:

  • Views: 974

Description

দিনাজপুর জেলা: ইতিহাস, ভূগোল ও অর্থনীতি

দিনাজপুর জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি প্রাচীন ও বৃহৎ জেলা। আয়তনের দিক থেকে এটি উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম জেলা। জেলার ইতিহাস প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বহু ঘটনার সাক্ষী। গুপ্ত যুগের তাম্রলিপি ও পাল রাজাদের শাসনকালে দিনাজপুরের পুণ্ড্রবর্ধনভুক্ত দুটি প্রশাসনিক অঞ্চল ছিল—কোটিবর্ষ ও পঞ্চনগরী। পঞ্চনগরীকে বর্তমান চরকাই-বিরামপুর এলাকা হিসেবে ধরা হয়। এখানে বহু প্রাচীন জনপদ এবং নগরীর ধ্বংসাবশেষ বিদ্যমান।

দিনাজপুর একসময় পুণ্ড্রবর্ধনের অংশ ছিল এবং ব্রিটিশ শাসনকালে ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৭৮৬ সালে জেলা প্রশাসন গঠিত হয়। ১৮৫৬ সালে দিনাজপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দেশের প্রাথমিক পৌরসভাগুলির মধ্যে একটি। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পশ্চিম দিনাজপুর ভারতের অংশে যায় এবং ১৯৮৪ সালে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় পৃথক জেলা হিসেবে আলাদা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় দিনাজপুর ৬ ও ৭ নং সেক্টরের আওতায় ছিল। জেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী লড়াইয়ে বহু শহীদ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর শহীদদের স্মরণে জেলায় ৫টি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

ভৌগোলিকভাবে, দিনাজপুরের উত্তরে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, পূর্বে নীলফামারী ও রংপুর, এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত। জেলার মোট আয়তন প্রায় ৩,৪৩৮ বর্গকিমি। এখানে ১৩টি উপজেলা, ৯টি পৌরসভা, ১০৩টি ইউনিয়ন এবং প্রায় ২,১৪২টি গ্রাম রয়েছে। প্রধান নদীগুলোর মধ্যে আত্রাই, কাঁকড়া, ছোট যমুনা, করতোয়া ও যমুনেশ্বরী উল্লেখযোগ্য।

দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। ধান, লিচু, আলু, ভুট্টা ও ফলমুলের চাষ এখানে প্রসিদ্ধ। কাটারিভোগ ও কালিজিরা ধান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হয়। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এবং হাকিমপুর লৌহ খনি প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া সেতাবগঞ্জ চিনি কল, দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস, চালকল ও পাটকল জেলা শিল্পায়নের প্রধান কেন্দ্র।

শিক্ষা ক্ষেত্রে দিনাজপুরে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, সরকারি কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। জেলা জুড়ে ১,৭১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১১৮টি কলেজ পরিচালিত হয়।

দর্শনীয় স্থান হিসেবে কান্তনগর মন্দির, রামসাগর, আনন্দসাগর, দিনাজপুর জাদুঘর, রাজবাড়ি, নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান ও হিলি স্থলবন্দর উল্লেখযোগ্য। জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত। পার্বতীপুর জংশন রেলওয়ে নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান রাখে।

দিনাজপুরের সমৃদ্ধ ইতিহাস, কৃষি ও শিল্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এটিকে উত্তরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিত করেছে।

বিস্তারিত জানতে>>>> ক্লিক করুন দিনাজপুর স্টোরে

Comments

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked. *

Success! Thanks for your comment. We appreciate your response.
You might have left one of the fields blank, or be posting too quickly